কাঠামোর ফাটল বা চিড়



ফাটল সাধারণত দুই ধরণের হতে পারেঃ
১) কাঠামোগত ফাটল,
২) অকাঠামোগত ফাটল।


★★কাঠামোগত ফাটলঃ
যদি কোন ভবনের বীম, কলাম,
ছাদ কিংবা কঙ্ক্রীট
দেওয়ালের মধ্যে ফাটল
দেখা দেয় তাকে
প্রকৌশলীরা কাঠামোগত
ফাটল (Structural Cracks) বলে
থাকেন। এই ধরণের ফাটল
যেকোন ভবনের জন্য ঝুকির
কারন।
প্রকৌশলীরা সাধারণত কাঠামগত ফাটলের
জন্য:
ক) নকশাজনিত ত্রুটি ও
খ) নির্মানজনিত ত্রুটি এই দুই
ধরণের কারনগুলো কে দায়ী
করে থাকেন। নিচে এই
ত্রুটিদ্বয়ের বিস্তারিত
ব্যাখ্যা দেয়া হলঃ

ক) নকশাজনিত ত্রুটিঃ
স্থপতি যে নকশা প্রণয়ন
করেছেন কাঠামো
প্রকৌশলী সেটিকে
সঠিকভাবে মুল্যায়ন করে
ভবনের কাঠামোগত আচরণ
যদি বুঝতে না পারেন।
ভবনের উপর আগত লোড
ধরার ক্ষেত্রে ত্রুটি,
সঠিকভাবে পার্শ্বিয়
লোড (যেমনঃ বাতাস,
ভুমিকম্প) ধরার ক্ষেত্রে
ত্রুটি এবং ভবনটি কি
কাজে ব্যবহৃত হবে সে
সম্পর্কে ধারণা না
থাকলে ভবনটিকে
সঠিকভাবে মুল্যায়ন করে
কাঠামোগত নকশা প্রণয়ন
করা সম্ভব হয়না ।
অনেকসময় দেখা যায় যে,
বাড়ির মালিক প্রকৌশলী
বা স্থপতি কে ভবনের
ব্যবহারের বিষয়টি
একভাবে বলছেন আর
বাস্তবে ব্যবহার করছেন
আরেক ভাবে। যেমন
বাড়ির মালিক হয়ত ভবনের
নকশা প্রণয়নের সময়
বলেছেন যে, ভবনটি
বাসাবাড়িতে মানুষ
থাকার জন্য ব্যবহৃত হবে
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল
ভবনটি গার্মেন্টস, ব্যাংক
বা অফিসের কাজে ভাড়া
দিয়ে দিচ্ছেন। এই সমস্ত
ত্রুটির কারনে অতিরিক্ত
লোড বীম-কলাম কে বহন
করতে হয়। ফলে বীমের
মধ্যে ফ্লেক্সারাল ক্র্যাক
বা সিয়ার ক্র্যাক এবং
কলামের মধ্যে বাঁকলিং
জনিত ক্র্যাক দেখা দেয়।
ভবনের ফিনিশিং কাজ
করার সময় বাড়ির মালিক
দামী-দামী টাইলস,
বাথরুম বা কিচেনের
স্যানিটারি মালামাল
এবং ইলেক্ট্রিক্যাল সুইচ-
সকেট ব্যবহার করেন। কিন্তু
বাড়ি তৈরী করার আগে
যে মাটি পরীক্ষা করা
প্রয়োজন সেদিকে নজর
দেন না। যে মাটির উপর
এত বিশাল ভবনটি দাড়িয়ে
থাকবে সেই মাটি
পরীক্ষা করতে যে অর্থের
প্রয়োজন তা ভবনের
নির্মান খরচের তুলনায় খুবই
কম। কিন্তু এই পরীক্ষার
ফলাফলটি যদি হাতে না
থাকে বা পরীক্ষাটি যদি
সঠিক জায়গা থেকে না
করা হয়ে থাকে তাহলে
মাটির বিয়ারিং
ক্যাপাসিটি, সেটেলমেন্ট
এবং অন্যান্য গুনাগুন
সম্পর্কে ধারনা করতে
পারা যায় না। সুতরাং
সেই ভবনটিতে সঠিক
ভিত্তি-প্রস্তরের পদ্ধতি
অনুসরণ করা সম্ভব হয় না।
ফলে মাটি উক্ত ভবনের
চাপ সহ্য করতে না পেরে
নিচে দেবে যেতে পারে।
এতে করে ভবনে ফাটল
দেখা দিতে পারে।
ভবনের বীম, কলাম, ছাদ
কিংবা কঙ্ক্রীট
দেওয়ালের মধ্যে ব্যাবহৃত
রডের ডিটেইলিং ঠিকমত
না করলে ভুমিকম্প বা
বাতাসের জন্য সৃষ্ট
অতিরিক্ত লোডের কারনে
ভবনের ফাটল দেখা দিতে
পারে।

অনেক সময় দেখা
যায়, স্থপতি বা বাড়ির
মালিক ভবনের
স্ট্রাকচারাল নকশা
প্রণয়নের সময় ফ্ল্যাট প্লেট
বা ফ্ল্যাট স্লাব- এ
নকশাটি প্রণয়ন করার জন্য
এবং চিকন সাইজের কলাম
দেয়ার জন্য প্রকৌশলীকে
চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন।
কিন্তু বাংলাদেশের
বিল্ডিং কোডে স্পষ্ট করে
বলে দেয়া হয়েছে যে,
ভুমিকম্পপ্রবন এলাকাতে
বীম-কলাম পদ্ধতি অনুসরণ
করা উচিত এবং সেই
কলামের সর্বনিম্ন মাপ
হবে ১২ ইঞ্চি। কাঠামো
প্রকৌশলী যদি তার
বিল্ডিং কোডের বাইরে
কিছু না করতে চান, তখন
দেখা যায় বাড়ির মালিক
অন্য কোন প্রকৌশলী কে
দিয়ে নকশা প্রণয়ন করিয়ে
থাকেন। এটি নৈতিকতার
প্রশ্নের সাথে জড়িত। সব
পেশায় নৈতিক ও
অনৈতিক বিষয়টি আছে।
সুতরাং নৈতিকতার
প্রশ্নে আপোস করলে
অর্থ্যাৎ বিল্ডিং কোড
মেনে ভবন নির্মাণ না
করলে ভবনে কোন না কোন
সময় ফাটল সৃষ্টি হতে
পারে।
কাঠামোর ফাটল বা চিড় কাঠামোর ফাটল বা চিড় Reviewed by Unknown on October 12, 2016 Rating: 5

1 comment:

  1. এই ধরনের কলাম ফাটল হলে সেক্ষেত্রে কি করনীয় যদি বলতেন ?

    ReplyDelete

AR.RoMaN. Theme images by imagedepotpro. Powered by Blogger.